১৭ বছর আগের এই দিনে মুহুর্মুহু গ্রেনেডের বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ। মানুষের আর্তনাদ আর কাতর ছোটাছুটিতে তৈরি হয় এক বিভীষিকা। গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে পড়ে ওই হামলায়। আজ সেই ২১ আগস্ট, রক্তাক্ত বিভীষিকাময় দিন। ২০০৪ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে অতর্কিতে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। মারা যান আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী। সাংবাদিকেরাও আহত হন। আওয়ামী লীগ বলছে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের কালরাতের বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের ধারাবাহিকতা। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে সংগঠনের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলের প্রথম সারির নেতাদের হত্যার উদ্দেশ্যেই ওই ঘৃণ্য হামলা চালায় ঘাতক চক্র। তখন ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। সেদিন ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিবিরোধী’ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেছিল তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশের আগে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে স্থাপিত অস্থায়ী ট্রাকমঞ্চে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা শেষ হওয়ার পরপরই তাঁকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা শুরু হয়। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে একের পর এক গ্রেনেড। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু ১৩টি গ্রেনেড বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই মানুষের রক্ত-মাংসের স্তূপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পরিণত হয় এক মৃত্যুপুরীতে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নির্মিত শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করা হবে। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় ২১ আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ ও নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং বক্তব্য দেবেন।