ভাইয়ের সাথে অভিমান করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) ১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তার পর লক্ষ্মীপুর জজ কোর্ট ভবনের ৫ম তলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে রাকিব হোসেন রোমান (২০) নামের এক যুবক।
বুধবার দুপুর ১২টায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে শতশত উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় জমান। পরে স্থানীয়রা তার মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। নিহত রাকিব লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের মজুপুর এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলামের ছেলে ও তার বড় ভাই সোহেলের দোকানের সহযোগী হিসেবে ছিলেন। এ ঘটনার আধা ঘণ্টা আগে নিজের ফেসবুক আইডিতে ১ মিনিট ৪৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও বার্তা দেন রাকিব। মাকে উদ্দেশ্য করে ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘আমি সজ্ঞানে মরতে যাচ্ছি, জীবনে অনেক ভুল করেছি, আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমি সোহেল ভাইয়ের দোকানের তামা চুরি করি নাই। আমি অনেক ভুল করেছি। আমি সুমাইয়া নামে একটি মেয়েকে বিয়ে করেছি। তার জীবন নষ্ট করেছি, তাকে সুখী করতে পারিনি। আমার একাউন্টে ৭৫ হাজার টাকা আছে, বাড়িতে আমার ড্রয়ারে এটিএম কার্ড আছে। আমার একাউন্টের পিন কোড নং ….। মা তুমি টাকা গুলো উঠিয়ে নিও। আব্বাকে বলিও আমাকে ক্ষমা করে দিতে।’প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, লক্ষ্মীপুর জজকোর্ট প্রাঙ্গণে সবাই যখন নিজ নিজ কর্মে ব্যস্ত রয়েছেন ঠিক তখনি একটি শব্দ শুনতে পান আশে পাশের লোকজন। এ সময় দেখতে পান একজন যুবক মাটিতে পড়ে আছে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।এদিকে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রোমানের পরিবারের লোকজন। তার বড় ভাই সোহেল গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, সকালে রোমানকে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বকাঝকা করা হয়। পরে সে দোকান থেকে অভিমান করে বের হয়ে আসে। এরপর তার মৃত্যু সংবাদ শুনতে পান বলে জানান তিনি। এ ব্যাপারে পুলিশের কোর্ট পরিদর্শক কিশোর কুমার জানান, ৫ম তলা থেকে লাফ দিয়ে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।