করোনা মহামারিতে দেশে ফেরত প্রবাসীদের বিদেশে যেতে বা দেশে স্বাবলম্বী হতে স্বল্প সুদে সারা দেশে ঋণ সুবিধা দিচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। কিন্তু ঝিনাইদহে এর ব্যক্তিক্রম। জেলায় ঋণ সুবিধা চালু থাকলেও কর্মকর্তারা প্রবাসীদের বলছেন ঋণ দেওয়া বন্ধ আছে। দিনের পর দিন ব্যাংকের শাখায় ঘুরতে হচ্ছে অসহায় প্রবাসীদের। এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগিরা।
সরেজমিনে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখায় গিয়ে ঋণ আবেদন করতে আসা প্রবাসীদের সাথে কথা বলে এ মিথ্যাচারের সত্যতা মিলেছে।
সোমবার ব্যাংকের শাখায় আসা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মোল্লাডাঙ্গা গ্রাম থেকে আসা মালেশিয়া প্রবাসী রাজু হুসাইন বলেন, আমি মালেশিয়া থেকে দেশে ফিরে এখন আবার যেতে চাচ্ছি। বিমানের টিকিট কেনা টাকা নেই। গত ২ মাস ধরে ব্যাংকে আসছি। ব্যাংকে এলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন ঋণ দেওয়া বন্ধ আছে। ঋণ চালু হলে আপনাদের জানানো হবে। সোমবার ব্যাংকে আসার পর একই কথা বললেন।
সদর উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের দুবাই প্রবাসী পলাশ কুমার বিশ্বাস বলেন, করোনার কারণে দুবাই থেকে দেশে এসেছি। এখন যেতে পারছি না। ভেবেছিলাম প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়িতে খামার করব। গত ১ মাস ধরে এখানে ঘুরছি। ঋণ চালু নেই বলে দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা। আজ এসেছি ব্যাংকের কর্মকর্তারা বললেন এখন ঋণ দেওয়া চালু হয়নি আপনি আগামী সপ্তাহে আসেন।
শৈলকুপা থেকে আসা এক প্রবাসী বলেন, এর আগে এসেছিলাম তখন তারা বলেছিলেন এ মাস থেকে নাকি লোন দেওয়া চালু হবে। এখন পর্যন্ত আমরা লোন পাইনি। এমনকি আবেদন করতে কি কাগজ লাগবে তা এনারা বলছেন না। আজ না কাল এই বলে ঘোরাচ্ছেন।
সদরের বেতাই গ্রাম থেকে আসা ইউনুস নামের এক প্রবাসী বলেন, মাসের পর মার ঘোরাচ্ছেন। বলছে ঋণ চালু নেই। ওরা শুধু বলে সামনের সপ্তাই। আজ এসে বললে বলছেন, অফিসার নেই, চালু হয়নি। সামনের সপ্তাহে আসেন। ঋণ আবেদন করতে আসা সবাইকে এভাবে ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার মান্দারবাড়িয়া গ্রাম থেকে আসা প্রবাসী ওহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের সব জেলায় ঋণ সুবিধা চালু থাকলেও এই শাখায় এলে বলা হচ্ছে ঋণ বন্ধ আছে। সরকার প্রবাসীদের সহযোগিতা করতে চাচ্ছে আর এই্ শাখার কর্মকর্তারা সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করছেন। কোন অদৃশ্য কারণে তারা এ মিথ্যাচার করছেন এর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখার ব্যবস্থাপক শেখ সিফাতি’র সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা তো সরকারের টাকা কোলের মধ্যে রেখে দিব না। আবেদন করলে আমরা তা ঢাকায় পাঠাবো। ঋণ বন্ধ আছে প্রবাসীদের ব্যাংক থেকে বলা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রবাসীরা ভুল বলছে। ঋণ দেওয়া চালু আছে।