ঝিনাইদহ জেলা পুলিশে এখন আধুনিকতার ছাপ, মানবিক পুলিশ। মামলা, জিডি ও যে কোন কাজে হয়রানী মুক্ত পরিবেশ। পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও পুলিশ ভেরিফিকেশনে ঘুষ নেই। মানুষের নেই অযাথা হয়রানী ও ভোগান্তি। গ্রেফতার বানিজ্য বন্ধ হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানাসহ বিভিন্ন সেক্টর এ ভাবেই গড়ে তোলা হয়েছে। বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে হারানো মোবাইল, প্রতারণার মাধ্যমে বিকাশের টাকা, ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক উদ্ধার করে এক অনন্য নজীর গড়েছে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ। এ পর্যন্ত একাধিক মানুষের চুরি বা ছিনতাই হওয়া মানুষের মোবাইল ও বিকাশের মাধ্যমে নেওয়া টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ঝিনাইদহ পুলিশ। তাছাড়া ব্যক্তিগত পাওয়ানা টাকা উদ্ধারেও কার্যকর ভুমিকা পালন করছে সদর থানা পুলিশ। আর এ সব সম্ভব হচ্ছে এক ঝাক তরুন দক্ষ পুলিশ অফিসারের কারণে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর সমসপুর গ্রামের লিমনের একটি মোবাইল হারিয়ে যায় মধুপুর বাজার থেকে গোয়ালপাড়া যাওয়ার পথে। তিনি জিডি করলে হাটগোপালপুর পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই মোবাইলটি উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেন। দুই বছর আগে সদর উপজেলার ভুপতিপুর গ্রামের আবেদ আলীর ছেলে রাজু আহম্মেদ পৌর এলাকার পবহাটি গ্রামের শহিদুলের ছেলে মোঃ সরোয়ারের নিকট হতে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে ঘুরাতে থাকেন। টাকা ফেরৎ না দেওয়ার এক পর্যায়ে সরোয়ার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করে। ঝিনাইদহ থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের মধ্যস্থতায় সরোয়ারকে রাজু তার পাওনা দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দেন। কুমিল্লার হাবিব নামে এক ব্যক্তির একটি মোবাইল ঝিনাইদহ পৌর এলাকার কালিকাপুর শ্বশুর বাড়ী হতে চুরি হয়। হাবিব থানায় অভিযোগ করলে উক্ত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে মালিকের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। চর মুরারীদহ গ্রামের মোঃ হাফিজ ৫ বছর আগে ৯১ হাজার টাকা ধার নেন আরাপপুরের আব্দুল আলীমের কাছ থেকে। টাকা না পেয়ে তিনি থানায় অভিযোগ করলে টাকা উদ্ধারের ব্যবস্থা করে দেয় পুলিশ। একাত্তর টিভির সাংবাদিক রাজিবের মোবাইল ফোন হারিয়ে যায় সদরের হলিধানী এলাকা থেকে। তিনি পুলিশকে জানালে তথ্য প্রযুক্তি ব্যহার করে তার মোবাইল ২৪ ঘন্টার মধ্যে উদ্ধার করে দেন। ঝিনাইদহ শহরের ভুটিয়ারগাতি এলাকার যুবক নিজেই আত্মগোপনে থেকে অপহরণ নাটক সাজায়। ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাকে অক্ষত উদ্ধার করেন। প্রমানতি হয় আশিক অনেকের কাঝ থেকে টাকা নিয়ে নিজেই নাটক সাজায়। মাগুরার ভায়না মোড় থেকে গত ৯ সেপ্টম্বর মিজানুর রহমান রেন্টুর ২২ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল সেট হারিয়ে যায়। সেটি উদ্ধার করে মালিককে ফেরৎ দেয় পুলিশ। ব্যাপারীপাড়ার রং মিস্ত্রি লালটুর ১০ হাজার টাকা প্রতারককরা বিকাশের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। গত ২৫ আগষ্ট টাকা উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ঝিনাইদহ বিজয় টিভির প্রতিনিধি ও প্রেসক্লাবের সদস্য জহুরুল ইসলাম হিরোর ৯ হাজার ৮’শ টাকা বিকাশ একাউন্ট হ্যাক করে প্রতারককরা নিয়ে নেয়। তিনিও সেই টাকা ফেরৎ পান। এ ভাবে একের পর এক চমক সৃষ্টি করে চলেছেন ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ। অনেক ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক মোবাইল ট্রাকিং করে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অন্যান্য থানার ওসিগন তথ্য প্রযুক্তির কাজে তেমন একটা দক্ষতা দেখানে পারেন নি। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানান, আমরা সব কাজে যে সফল হয়েছি তা নয়। তবে পুলিশ মানবিক ও জনবান্ধব হওয়ার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা সাধ্যমতো মানুষের হারানো বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল এবং বিকাশের টাকা উদ্ধার করছি। আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।