ঝিনাইদহ জেলায় এবার আমন আবাদে ব্যাপক লোকসান হয়েছে। সার-কীটনাশকের মূল্যবৃদ্ধি, বৃষ্টির অভাবের পাশাপাশি কারেন্ট পোকার আক্রমণে ফলনে ধ্বস নেমেছে।
ঝিনাইদহ জেলায় এবার আমন মৌসুমে এক লাখ চার হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। কিন্তু সার-কীটনাশকের মূল্যবৃদ্ধি, বৃষ্টির অভাবের পাশাপাশি কারেন্ট পোকার আক্রমণে ফলনে ধ্বস নেমেছে।
ঝিনাইদহ শহরের ব্যাপারীপাড়ার কৃষক আজিজুর রহমান ৮ বিঘা জমিতে এবার আমন আবাদ করেছিলেন। ধান চাষে তার ব্যায় হয়েছিল এক লাখ ৪৮ হাজার টাকা। কিন্তু তিনি ৮ বিঘা জমিতে ধান পেয়েছেন মাত্র ১০৪ মন। গত বছর এই মৌসুমে সমপরিমান জমিতে তার আমন ধান হয়েছিল ২২০ মন।
জীবনা গ্রামের কৃষক আইয়ূব হোসেন জানান, বংকিরা মাঠে তার এবার আমনের আবাদ ছিল। কিন্তু গড়ে ফলন হয়েছে বিঘায় ১৪ মন করে। এতে উৎপাদন খরচ ওঠেনি।
বংকিরা গ্রামের কৃষক বাবুল বিশ্বাস জানান, এক বিঘা জমিতে আমন আবাদ করতে সর্ব নিম্ন ব্যায় হয়েছে ১৩ হাজার ১০০ টাকা। এরমধ্যে জমি চাষ ১৫০০ টাকা, ধান লাগানো ১৫০০ টাকা, সার, কীটনাশক ও নিড়ানো ব্যায় ৫ হাজার টাকা, ধান কাটা বিঘা প্রতি ২৫০০ টাকা ও ধান ঝাড়া ১৫০০ টাকা করে ব্যায় হয়।
ধান চাষ করতে গিয়ে অনেক কৃষক এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছেন। ফলন ভালো না হওয়ায় এখন জমি বন্ধক রেখে সার-কীটনাশকের দাম পরিশোধ করতে হচ্ছে বলে ওই কৃষক জানান। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আজগর আলী জানান, এবার ধানের ফলন কম হওয়ার মূল কারণ সার-কীটনাশকের মূল্যবৃদ্ধি, বৃষ্টির অভাব ও কারেন্ট পোকার আক্রমণ। তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য সরকারি প্রণোদনা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এছাড়া সার-কীটনাশকের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কৃষকদের জন্য সার-কীটনাশক সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে তোলার জন্য কাজ করা হচ্ছে।
সার-কীটনাশকের মূল্যবৃদ্ধির কারণে কৃষকদের জন্য সার-কীটনাশক সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী করে তুলতে হবে।
ধানের ফলন বৃদ্ধির জন্য সরকারি প্রণোদনা বৃদ্ধি করা।ধানের কারেন্ট পোকা দমন পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকদের সচেতন করা।
ঝিনাইদহে এবার আমন আবাদে ব্যাপক লোকসান হয়েছে। কৃষকদের মধ্যে হাহাকার পড়েছে। সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের মাধ্যমে কৃষকদের এই দুঃখ দুর্দশা লাঘব করা জরুরি।